জাতীয়

আদর্শ সমাজ গঠনে মুফাসসিরদের ভূমিকা অপরিসীম: ডা. শফিকুর রহমান

  নিজস্ব প্রতিবেদক :: ১৪ অক্টোবর ২০২৪ , ৬:১৬:০১ প্রিন্ট সংস্করণ

Screenshot 1

আদর্শ সমাজ গঠনে মুফাসসিরদের ভূমিকা অপরিসীম। কেননা তারা জাতির রাহবার। বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরীনের উদ্যোগে আজ সোমবার সকালে ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে দেশবরেণ্য মুফাসসিরদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় মুফাসসির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘মুফাসসিররা হলো পথহারা জাতির পথ প্রদর্শক। সঠিক পথের সন্ধান দেয়া জাতির প্রতি মুফাসসিরদের কোন দয়া নয় বরং এটা তাদের দায়িত্ব। আপনারা জাতির রাহবার। অতীতে যারা এই দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়েছেন আমরা তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। তারা কারো চোখ রাঙ্গানিকে পরোয়া করেনি বরং প্রয়োজনে আল্লাহর রাস্তায় জীবনকে কোরবানি করে দিয়েছেন। কাজেই দ্বীন প্রচারের কাজে বাঁধা আসবেই সে বাঁধাকে মোকাবেলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, তাফসির মাহফিল থেকে জনগণ যে রূহানী খোরাক চায় সে বিষয়ে যারা তাফসির পেশ করেন তারা সচেতন আছেন। আপনাদের আরো একটূ বেশি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাই। যদি আপনাদের বয়ানটা কুরআন, সুন্নাহ ও সাহাবীদের জীবনের আলোকে হয় তাহলে মানুষ এর থেকে শিক্ষা নিয়ে বাস্তব জীবনে আমল করতে পারবেন। তাছাড়া মুফাসসিরদের একেকটা বক্তব্য জাতির একেকটা মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এটা যুগেযুগে প্রমাণ হয়েছে। কেননা উলামারা কোটি কোটি মানুষের কলিজা, প্রাণ প্রিয় মানুষ ও আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে স্মরণ করে বলেন, আজ তাকে আমার বড়ই মনে পড়ছে, এই ফুলের বাগানটা তিনিই সাজিয়ে গিয়েছেন। আজ তিনি থাকলে মনভরে দেখতে পারতেন। কারাগারে তার সাথে আমার দুইবার মোলাকাত হয়েছে, তার ইচ্ছা ছিলো কুরআনের ময়দানে তিনি আবার ফিরে আসবেন ও পবিত্র কাবা জিয়ারত করবেন। কিন্তু তিনি তার সবকিছু আল্লাহর রাস্তায় বিলিয়ে দিয়ে শাহাদাত বরণ করেছেন। আপনাদেরকে তার রেখে যাওয়া কাজকে আঞ্জাম দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তিনি এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আল্লামা হযরত মাওলানা লুতফর রহমানসহ সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে দ্বিন প্রচারের জন্য যারা শাহাদাত বরণ করেছেন, কারা নির্যাতিত হয়েছেন, মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন, আমি তাদের জন্য আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম প্রতিদান কামনা করছি।
সংঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক নুরুল আমীনের পরিচালনায় বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উলামা বিভাগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রধান উপদেষ্টা নুরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মাদ সেলিম উদ্দিন, ছাত্র সংগঠনের সাবেক কেন্দ্রিয় সভাপতি সাইফুল আলম খান মিলন, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনূল আবেদীন, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আ.ন.ম. রফিকুর রহমান, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসারা অধ্যক্ষ আবু ইউছুফ, মাওলানা ড. সামিউল হক ফারুকী, মাওলানা আবুদস সামাদ, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি জেনারেল ড. খলিলুর রহমান মাদানী, অধ্যক্ষ মাওলানা শাহজাহান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উলামা বিভাগের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের উলামা বিভাগের সভাপতি ড. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আ.ন.ম রশিদ আহমদ আল মাদানী, মদিনাতুল উলুম কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার, ছারছিনার পীর শাহ আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী, আলহাজ্জ শামীম সাঈদী, মুফাসসিরে কোরআন মুফতি আমির হামজা ও আইম্মা উলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি রেজাউল করিম আবরার।
বিশেষ অতিথিবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুগে যুগে আলেমদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। গত ৫ আগস্ট বিজয়েও আলেমদের ত্যাগ কোরবানী ছিলো নজিরবিহীন। অনেক ইমাম খতিব বক্তারা জীবন দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, সারাজীবনের জন্য চোখ হারিয়েছেন যা ইতিহাস হয়ে থাকবে। আগামীর বাংলাদেশ গড়তে এই মুফাসসিরদের সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তাছাড়া দ্বীনের একনিষ্ট খাদেম হিসেবে পরকাল ভিত্তিক জীবন পরিচালনা করতে হবে।
এছাড়া আরও বক্তব্য দেন মাওলানা কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল-আমীন, মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, মাওলানা মুস্তাক ফয়েজি, মাওলানা লুৎফর রহমান, মাওলানা ফখরুদ্দিন আহমেদ, আব্দুল মোমেন নাসেরী, মাওলানা নাসির উদ্দিন হেলালী, মাওলানা রুহুল আমীন, মুহাদ্দিস মাহমুদুল হাসান, মুহাদ্দিস আবু নছর আশরাফী, মাওলানা মাহমুদূর রহমান দেলওয়ার, মাওলানা সাদিকুর রহমান আজহারী ও মাওলানা মুস্তাফিজ রহমানী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলনে দেশবরেণ্য শিল্পীদের মধ্যে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মশিউর রহমান, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আজহারী, শিল্পী রোকোনুজ্জামান, শিল্পী কবির বিন সামাদ, শিল্পী নেয়ামতুল্লাহ নিজামী। এছাড়াও সম্মেলনে সারা দেশ থেকে আগত তিন হাজারের অধিক মুফাসসিরে কুরআন অংশগ্রহণ করেন।

আরও খবর

Sponsered content