স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ , ১০:১৫:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
গাজীপুরের টিএনজেড অ্যাপারেলসের শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে টাকা আত্মসাৎ ও টানা তিন দিন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধে শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে জননিরাপত্তায় হুমকি ও দুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগে টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক আব্দুল হালিমকে (৪৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। মো. আব্দুল হালিম (৪৮) চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে। গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) নাজির আহমেদ এ সব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
নাজির আহমেদ বলেন, টিএনজেড গ্রুপের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ গাজীপুরের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে ১৪ ফিল্ড সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম সেনাবাহিনীর একটি টহল দল আব্দুল হালিমকে চট্টগ্রামের বাসা থেকে আটক করে। পরে তাকে গাজীপুরের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে বুধবার বেলা একটার দিকে আব্দুল হালিমকে বাসন থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী।
তিনি আরও জানান, আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। টিএনজেড গ্রুপের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় শ্রমিকদের বেতনের টাকা না দিয়ে ৫ কোটি টাকা প্রতারণা ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। অপর একটি মামলার বাদী পুলিশ। সেখানে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ ও কারখানা ভাঙচুরের উসকানি দিয়ে জানমাল ও সম্পদের ক্ষতি সাধন, জননিরাপত্তার হুমকি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাহেদুল ইসলাম জানান, দুটি মামলায় বুধবার বিকেলে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে গত শনিবার সকাল ৯টা হতে সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে মানুষের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এ সময় তারা কয়েকটি কারখানা ভাঙচুর করে। নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কারণে টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটিসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। পরে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব নিলে শ্রমিকেরা ৩ দিন পর অবরোধ প্রত্যাহার করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। আশপাশের অন্য কারখানাগুলো চালু হলেও গ্যাস ও বিদ্যুৎ সমস্যাসহ নানা কারণে টিএনজেড গ্রুপের কারখানাগুলো এখনো চালু হয়নি।