নিজস্ব প্রতিবেদক :: ৯ অক্টোবর ২০২৪ , ১০:৪৬:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীর খিলক্ষেত লেকসিটি কনকর্ড ছায়ানীড় ভবন ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, মাদক দ্রব্য ও দু’টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে অভিযান পরিচালনাকালে বনানী ১১ এর সেলসিয়াস শিষাবাদের সামনে থেকে অস্ত্রসহ উদ্ধার হয় নাফিস মো. আলম ডন। পরবর্তীতে তার খিলক্ষেতের ফ্ল্যাট থেকে মো. সুজন নামে আরো একজন সহযোগীকে আটক করা হয়।
এসময় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের মদ, বিয়ার, শিশা সেবনের স্ট্যান্ড, ফয়েল পেপার, বিভিন্ন মদের ডিলারদের তথ্য সংবলিত ডায়েরি, ওয়াকটকি সেট, সিগন্যাল লাইট, সিসি ক্যামেরা, ল্যাপটপ, ইলেক্ট্রিক ডিভাইস, নগদ অর্থ ইত্যাদি জব্দ করে দিয়াবাড়ি সেনা ক্যাম্প ও খিলক্ষেত থানা পুলিশ এর যৌথবাহিনী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাফিস মো. আলম এর বাংলাদেশ ও কানাডার দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। কানাডার পাসপোর্ট দেখিয়ে সে নিজেকে বাংলাদেশে ফরেইনার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বেড়ায় এবং প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মদ ব্যবসা`র সাম্রাজ্য তৈরি করেছে। বনানী ১১ এর সেলসিয়াস শিশা বার, একই রোডের বনানী ফার্মাসীসহ সে বেশ কিছু নামিদামি বার ও ক্লাবে মদ সরবরাহ করে। তার নিজস্ব মদ সরবরাহের কোম্পানি রয়েছে যার নাম সিন্ডিকেট ইন্টারন্যাশনাল।
জানা যায়, বসুন্ধরা, বারিধারা, গুলশান বনানী, উত্তরা এলাকাসহ ঢাকার বেশ কিছু স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মাঝেও সে এই মদের চালান যোগানদাতা। সে প্রায়ই নিজেকে ডন বলে পরিচয় দিতে বেশি পছন্দ করে। তার ফেসবুকের প্রোফাইল ঘাটলে দেখা যায়, জনসমক্ষে অস্ত্র, মদ, নারী ইত্যাদি নিয়ে উন্মাদনা করতে ৷ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের বিরুদ্ধে তার শট গান দিয়ে ফায়ারের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে সে সেই ভিডিও দিয়ে নিজের আধিপত্য আরাও বেশি জাহির করার চেষ্টা করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থানা হতে লুট হওয়া পুলিশের পিস্তল গুলোর মধ্যেই একটি নাফিসের নিকট থেকে পিস্তল উদ্ধার করা হয়। তবে কোন থানা থেকে এটি লুট করা হয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। নাফিসের এই সাম্রাজ্যে জড়িত রয়েছে তার স্ত্রীসহ আরো অনেকেই।
দিয়াবাড়ি সেনা ক্যাম্পের মেজর খন্দকার জাহিদুল হক বলেন, “নাফিসকে গ্রেপ্তার করার জন্য আমরা অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছিলাম। তাকে গ্রেপ্তার করার মাধ্যমে মাদক চোরাকারবারিদের প্রতি আমরা একটি শক্ত বার্তা দিতে পেরেছি বলে আশাবাদী। আমাদের এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”
নাফিস এর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলাসহ পূর্বের প্রায় ৭ টি মামলা রয়েছে। আজ অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার ও মাদকদ্রব্য সেবন আইনের আওতায় তার বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।