জাতীয়

পাওনা আদায় করে টাকা কেটে রাখলেন দুই শ্রমিক নেতা

  স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: ১৬ অক্টোবর ২০২৪ , ১১:১৭:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

Screenshot 2

গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পাওনা টাকা আদায়ের পর জোর করে টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে। সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় জয়দেবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শ্রমিকরা।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুরের বেগমপুর গ্রামে সোয়েটার তৈরি কারখানায় কয়েকশ শ্রমিক দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত ছিলেন। তারা গত ১২ অক্টোবর পূজার ছুটির দাবিতে প্রথমে কর্মবিরতি করেন এবং পরে ভবানীপুর এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এর প্রেক্ষিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রায় ২০০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করে এবং তাদের শ্রমআইন অনুযায়ী সকল পাওনাদি পরিশোধের অঙ্গীকার করে। পরে গত সোমবার তৃণমূল গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে শামীম খান ও ফাতেমা আক্তার নামে দু’জন ব্যক্তি সেখানে যান।
ভুক্তভোগীরা জানান, সোমবার বিকেলে পাওনা পরিশোধ করতে স্থানীয় সাফারি পার্ক হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে বৈঠকে বসেন ভুক্তভোগী শ্রমিক ও ফেডারেশনের নেতারা। পরে শ্রমিকদের উপস্থিতিতে পাওনা পরিশোধ করতে শুরু করে মালিক পক্ষ।
অভিযোগ উঠেছে, সেই সময় উপস্থিত ওই দুই শ্রমিক ফেডারেশন নেতা মধ্যস্থতার নামে প্রায় প্রত্যেক শ্রমিকের কাছ থেকে জোরপূর্বক ৭ হাজার টাকা করে আদায় করেন। থানায় করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে ১৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান তারা।
অভিযোগে বলা হয়, শ্রমিকরা প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং ভবিষ্যতে কোনো কারখানায় চাকরি করতে না দেওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনায় শ্রমিকদের পক্ষে মো. সুমন নিরাপত্তার জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত জাতীয় তৃণমূল শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা আক্তারকে ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। তবে তিনি অন্য সংবাদকর্মীদের বলেছেন, শ্রমিকরা আন্দোলন করায় ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রম আইন অনুযায়ী তাদেরকে চাকরি থেকে অব্যহতি দেয়। পরে ওই শ্রমিকরা আমাদের অফিসে আসেন। সোমবার তাদের পাওনাদি পরিশোধের সময় নির্ধারণ করা হয়। তারা যেন নায্য পাওনা বুঝে পান এবং বহিরাগতরা এসে ঝামেলা না করতে পারে এজন্য ঘটনাস্থলে ছিলাম। ওই সময়ে ৭০ থেকে ৮০ জনকে পাওনা বুঝে দেওয়া হয়। পরে তারা খুশি হয়ে আমাদের প্রতিজন শ্রমিক ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা দেন। এই টাকা নেওয়া দোষের কিছু না, এটি আমাদের সংগঠনের গঠনতন্ত্রে রয়েছে। তারা থানায় যে অভিযোগ করেছে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছি এটা অসত্য।
গাজীপুরের শ্রমিক নেতা ও অভ্যুত্থানকারী ছাত্র শ্রমিক জনতার সংগঠক আরমান হোসাইন বলেন, পূজার ছুটিকে কেন্দ্র করে ওই কারখানায় শ্রমিক ছাটাই করা হয়। তৃণমূল শ্রমিক ফেডারেশনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা শ্রমিকদের পাওনা টাকা নিয়ে যে প্রতারণা করেছে, সেটাতে তাদের গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে। ১৬০ জন শ্রমিকের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে এক বেসিক কেটে রেখে দিয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। গাজীপুর সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, জোরপূর্বক টাকা আত্মসাতের একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি যাচাই বাছাই করে দেখা হচ্ছে।

আরও খবর

Sponsered content