প্রতিনিধি ১৫ অক্টোবর ২০২৪ , ৪:৩৭:০০ প্রিন্ট সংস্করণ
গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা হারানোর পর টঙ্গী পূর্ব থানায় এখন পর্যন্ত ৪ বার ওসি বদল হয়েছে। চতুর্থ ওসি হিসেবে যোগদান করেছেন কায়সার আহমেদ। গত সোমবার জব্দকৃত সরকারি মালামাল বিক্রির অভিযোগে তৃতীয় ওসি মামুনুর রশীদ ও একজন এসআইকে ক্লোজড করা হয়। আজ মঙ্গলবার টঙ্গী পূর্ব থানার নতুন ওসি কায়সার আহমেদ থানায় যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। তাকে বদলি করা করে নতুন ওসি হিসেবে যোগদান করেন রাফিউল করিম রাফি। তাকেও বদলি করা হয়। এর পর যোগদান করেন এসএম মামুনুর রশীদ। সোমবার তাকেও বদলি করা হয়। চতুর্থ ওসি হিসেবে যোগদান করেন কায়সার আহমেদ।
জানা যায়, টঙ্গীতে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) গোডাউন থেকে জব্দকৃত চোরাই মালামাল বিক্রি ও বাহক কাভার্ডভ্যান ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই আরিফ হোসেনকে প্রত্যাহার করে জিএমপি। একই সঙ্গে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওসিকে বদলি করে মহানগর ডিবিতে পাঠানো হয়। টঙ্গী পূর্ব থানায় নতুন ওসি হিসেবে কায়সার আহমদকে পদায়ন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে টিএন্ডটি বাজার এলাকায় অবস্থিত বিটিসিএলের গোডাউনে রক্ষিত মালামাল চুরি করে কাভার্ডভ্যানযোগে নিয়ে যাচ্ছিলেন চোরচক্রের সদস্যরা। আশপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে এগিয়ে আসলে টিএন্ডটি স্কুল মাঠে মালামাল বোঝাই গাড়ি রেখেই পালিয়ে যায় চোরের দল। পরে খবর পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই আরিফ হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গাড়িটিকে জব্দ করে থানায় আনার জন্য রেকারকে খবর দেয় এবং থানার ওসিকে বিষয়টি জানায়। রেকার চালক অজয় রেকারসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কর্দমাক্ত রাস্তা থেকে গাড়িটি টেনে আনা সম্ভব নয় বলে ফিরে যান। পরে ভেকুর মাধ্যমে গাড়িটি তুলে এক লক্ষাধিক টাকায় গাড়িতে থাকা মালামাল বিক্রয় করে দিয়ে খালি গাড়িটি থানায় নিয়ে এসে জিডি দায়ের করেন। পরে গত ৩ সেপ্টেম্বর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন ওসি।
সূত্র জানায়, কাভার্ডভ্যানটিতে টিএন্ডটির প্রায় এক হাজার কেজি লোহা-লক্কড় ছিল যা এসআই আরিফ অফিসার ইনচার্জ মামুনুর রশীদের নির্দেশে একই এলাকার জনৈক মালেকের ভাঙারির দোকানে ৪৬ হাজার টাকায় বিক্রয় করে দেন। পরবর্তীতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর জিডি মূলে এসআই আরিফ শুধুমাত্র কাভার্ডভ্যানটি জব্দ দেখিয়ে গত ৩ অক্টোবর কাভার্ডভ্যানটির মালিক আবুল কালাম লিটনের কাছে হস্তান্তর করেন। চোরাইকৃত মালামাল ও চোরাই মালামাল পরিবহন করা হয়েছে জানা সত্ত্বেও ওসি গাড়ীর মালিক বা ড্রাইভারের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। এমনকি উক্ত বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করেননি। ঘটনার বিষয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন মহলে জানাজানি হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে এবং উক্ত বিষয়ে এসআই আরিফকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং ঘটনাটির সাথে ওসির সংশ্লিষ্টতার কথাও স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এ ঘটনায় প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে একজন এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।