জাতীয়

গাজীপুরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বনভূমি উদ্ধার শুরু, আটক ৪

  স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: ২১ অক্টোবর ২০২৪ , ৩:৫৬:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

Screenshot 2

ভাওয়াল গড় বাঁচাও আন্দোলনের দাবির মুখে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় গাজীপুরে জবরদখলকৃত বনভূমি উদ্ধার শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই উদ্ধার অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে ৪ জন। চলমান অভিযানে দ্রুত সময়ের মধ্যে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমদের প্রভাবে দখল হওয়া ভাওয়াল রিসোর্ট থেকে বনের জমি উদ্ধারে অভিযান চালানোর আহ্বান জানিয়েছে আন্দোলনকারী এই সামাজিক সংগঠন। আজ সোমবার (২১ অক্টোবর) ভাওয়ালের বনভূমি নিয়ে কাজ করা দুই যুগেরও বেশি সময়ে রাজপথে থাকা একমাত্র পরিবেশবাদী সংগঠন ভাওয়াল গড় বাঁচাও আন্দোলন এই দাবি জানায়।
ভাওয়াল গড় বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার হাছিবুর রহমান ও মহাসচিব রিপন আনসারীর বরাত দিয়ে এই তথ্য জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বেনজীরের বিরুদ্ধে গাজীপুরে বনের ৬.৭৩ একর জমি দখল করে ভাওয়াল রিসোর্ট নির্মাণের সংবাদ প্রকাশ করে। সাথে সাথে ভাওয়াল গড় বাঁচাও আন্দোলন আওয়ামী লীগ সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে গাজীপুরে মানববন্ধন করে বেনজীরসহ সব ভূমি দস্যুদের কবর থেকে জবরদখল হওয়া বনভূমি উদ্ধারের দাবি জানায়। কিন্তু সরকার বনভূমি উদ্ধার করেনি।
বর্তমান সরকারের সময় চলতি মাসের ১৪ অক্টোবর গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বেনজীরসহ সব ভূমি দস্যুদের কবল থেকে বনভূমি উদ্ধারের দাবি জানিয়ে ২০ অক্টোবরের মধ্যে দাবি পূরণের আল্টিমেটাম দেয় ভাওয়াল গড় বাঁচাও আন্দোলন। এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বনভূমি উদ্ধারে জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের দাবিতে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার নিকট লিখিত স্মারকলিপি দেয় এই সংগঠন।
এই অবস্থায় গত ১৯ অক্টোবর গাজীপুরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় জবরদখল হওয়া বনভূমি উদ্ধার শুরু হয় এবং প্রথম দিন উদ্ধার অভিযানে ৪ জনকে আটক করা হয়। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বনভূমি উদ্ধার শুরু হওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই সংগঠন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ভাওয়াল রিসোর্টসহ দখল হওয়া সব বনভূমি উদ্ধারের দাবি জানানো হয়।
জানা যায়, গাজীপুর সদর উপজেলায় বন বিভাগের জমি দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণের সময় চারজনকে আটক করা হয়েছে। পরে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত বন আইনে মামলা দিয়ে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে সদর উপজেলার মনিপুর এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি দলের সহযোগিতায় রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা জুয়েল রানার নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় অবৈধ ঘরবাড়ি ভেঙে বনের জমি জবরদখলমুক্ত করে বন বিভাগ।
আটক ব্যক্তিরা হলেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর গ্রামের ওপেন দুয়ারীর ছেলে রনজিত (৪৫), স্থানীয় মনিপুর এলাকার নাজিরের ছেলে কালাম (৪৮), পাবনার আমিনপুর থানার শিবপুর গ্রামের মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে খোকন শেখ (৪০), এবং সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার লাহিড়ী মোহনপুর গ্রামের মৃত রজব প্রামাণিকের ছেলে রফিকুল (৪৭)। অভিযানে রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের অধীনে সব বিট কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা জুয়েল রানা জানান, মনিপুর বিটের মনিপুর এলাকায় পিরুজালীর আমিনুল ইসলামের ছেলে সুমন মাহমুদ বনের জমি দখল করে বাড়ি নির্মাণ করছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানোর সময় বন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় জমিটি দখলমুক্ত করা হয় এবং চারজনকে আটক করা হয়। পল্লী বিদ্যুতের কর্মীদের দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content