বাকস্বাধীনতা ও তথ্যের অবাধ অভিগম্যতা নিশ্চিতের মাধ্যমে স্বপ্নের “নতুন বাংলাদেশ” বিনির্মাণে জেলা প্রশাসন গাজীপুর এর আয়োজনে এবং সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) টিআইবি এর সহযোগিতায় আজ রোববার সকালে ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন মো: ওয়াহিদ হোসেন- ডিডিএলজি, গাজীপুর, সালমা খাতুন- এডিএম, গাজীপুর, খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী- সিইও, জেলা পরিষদ, মোহাম্মদ কায়সার খসরু- এডিসি জেনারেল গাজীপুর, ফয়জুন্নেচ্ছা- সদস্য সনাক ও নির্বাহী পরিচাল, পরশ গাজীপুর, সনাক সভাপতি অধ্যাপক ফাতেমা জোহরা, সহ-সভাপতি মো: সোলাইমান হোসেন খান, ইয়ুথ এনগেমেন্ট এন্ড সাপোর্ট গ্রুপ সদস্য মেহেদী হাসান টুটুল, সক্রিয় নাগরিক দলের সদস্য এডভোকেট মাহমুদুল হাসান, মোঃ ওবাইদুল কবির মোল্লা, জেলা তথ্য অফিসার প্রমুখ।
কর্মসূচির শুরুতে তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহিতকরনের লক্ষ্যে মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন সুমি রানী দাশ, সহকারি কমিশনার, জেলা প্রশাসন গাজীপুর। পাশাপশি প্রতিবছরের ন্যায় সনাক এর সার্বিক তত্ত্ববধানে পরিচালিত ও টিআইবি’র সহযোগিতায় ২০২৪ সালের ওয়েব পোর্টাল পর্যবেক্ষণের প্রতিবেদন এর মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন টিআইবি’র এরিয়া কোঅর্ডিনেটর-সিই আবুল ফজল মোহাম্মদ আহাদ। উপস্থাপতি ওয়েব পোর্টাল পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে পোর্টালগুলো নিয়মিত হালনাগাদ রাখার কোন বিকল্প নেই। যতদ্রুত সম্ভব প্রতিটি পোর্টাল হালনাগাদ করার তাগিদ প্রদান করেন। সভার শেষে সনাক এর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে ওয়েব পোর্টাল পর্যবেক্ষণের প্রতিবেদন-২০২৪ হস্তান্তর করা হয়। এসময় সার্বজনীন তথ্য অধিকার, প্রবেশগম্যতা ও জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তথ্য অধিকার আইনের যুগোপযোগী সংশোধনসহ টিআইবি’র ১৩ দফা সুপারিশও উপস্থাপন করা হয়। টিআইবির ১৩ দফা সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে— বাকস্বাধীনতা ও ভিন্নমতের অধিকার নিশ্চিতের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন, সকল আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ, বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার নিরাপত্তা আইনের মত কালো আইনের মাধ্যমে সৃষ্ট জনগণের ওপর ডিজিটাল নজরদারী কাঠামো নিশ্চিহ্ন করা; তথ্য কমিশনকে অধিকতর কার্যকর করার স্বার্থে স্বচ্ছপ্রক্রিয়ায় যোগ্য ও দলীয় প্রভাবমুক্ত ব্যক্তিদের কমিশনার হিসেবে নিয়োগ প্রদানসহ এই সংস্থাটিকে সম্পূর্ণভাবে ঢেলে সাজানো; তথ্যপ্রকাশ ও তথ্যে অভিগম্যতার সুবিধার্থে ডিজিটাল টুলসের ব্যবহার সহজলভ্য ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন; তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯— এর পরিপন্থি’ বিদ্যমান আইনসমূহ সংস্কার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাতিল করা; নতুন কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তথ্য অধিকারের মূল চেতনার পরিপন্থি বা আইনটির কার্যকর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো ধারা যাতে সংযোজিত না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা; তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
এছাড়া একই সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ইয়েস সদস্যদের মাধ্যমে একটি ভ্রমাম্যমান তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র পরিচালনা করা হয়। এসময় আগত ৭০জন (নারী-পুরুষ) নাগরিকের মধ্যে তথ্য অধিকার আইনের ভাজপত্র ও তথ্য প্রপ্তির আবেদন ফরম বিতরণ করা হয়।